অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইহুদিবাদী ইসরাইলের নির্বিচার ও পাশবিক বিমান হামলার নজিরবিহীন সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি গতকাল (মঙ্গলবার) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে ওই সমালোচনা করেন।
জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, “ফিলিস্তিনিদের দুর্দশার কারণে হামাসের ‘ভয়ংকর’ হামলা যেমন বৈধতা পেতে পারে না তেমনি ওই হামলার কারণে ফিলিস্তিনি মানুষদের সম্মিলিতভাবে যে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, তাও বৈধতা পায় না।”
জাতিসংঘের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই সংস্থার কোনো মহাসচিব ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে এত স্পষ্ট করে কখনও সত্য বলেননি। গুতেরেস আরো বলেন, ইসরাইলে হামাসের হামলা বিনা কারণে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে গাজাবাসীকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখার কারণেই হামাস এ হামলা চালিয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব বিবেক জাগ্রত করা বক্তব্যে বলেন, “এটি স্বীকার করে নিতে হবে ইসরাইলে হামাসের হামলা এমনিতেই হয়নি। ফিলিস্তিনের মানুষ ৫৬ বছর ধরে শ্বাসরুদ্ধকর দখলদারিত্বের শিকার হয়েছে। তারা তাদের ভূখণ্ড [ইহুদি] বসতিতে পরিণত হতে এবং সহিংসতায় জর্জরিত হতে দেখেছে। তাদের অর্থনীতির গলা টিপে রাখা হয়েছে। এই মানুষগুলো বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। তাদের দুর্দশার রাজনৈতিক সমাধানের আশা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।”
ইসরাইলের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে জাতিসংঘ মহাসচিব আরো বলেন, “বেসামরিক লোকজনকে রক্ষা করার অর্থ তাদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা নয়। সুরক্ষা দেওয়ার অর্থ ১০ লাখ মানুষকে দক্ষিণে চলে যেতে বলা নয়, যেখানে কোনো আশ্রয় নেই, খাবার নেই, পানি নেই, ওষুধ নেই, জ্বালানি নেই। আর মানুষকে দক্ষিণে যেতে বলে সেখানে বোমাবর্ষণ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
ইহুদিবাদী ইসরাইল গত ১৩ অক্টোবর গাজা উপত্যকার উত্তর অংশের ১১ লাখ মানুষকে দক্ষিণ গাজায় সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ সবাই পালন করেনি। তবে যারা পালন করে দক্ষিণের দিকে যাচ্ছিল তাদের ওপর পথে পাশবিক বিমান হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসী ইসরাইলি সেনারা। এরকম একটি হামলায় অন্তত ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এরপর দক্ষিণের দুই শহর রাফাহ ও খান ইউনিসে ভয়াবহ বোমাবর্ষণ করে ইহুদিবাদী বাহিনী।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদে দেয়া ভাষণে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, যে পরিমাণ ত্রাণ এখন গাজায় ঢুকছে সেগুলো বিশাল সমুদ্রের প্রয়োজনের তুলনায় একটি ছোট ফোঁটার সমান।
Leave a Reply